দৈনিক ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম
একজন আদর্শ ছাত্র চায় পড়াশোন করে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে এবং তার লক্ষে পৌঁছাতে। তার জন্য দরকার পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানা। ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন এবং কিভাবে দিনে ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন তৈরী করা যায় সে সম্পর্কে অবগত হওয়া। এছাড়া সেই রুটিন অনুযায়ী কিভাবে পড়াশোনা করা যায় সেই ভাবে নিজের সময় নির্ধারন করা।
যথাযথভাবে পড়া রুটিন তৈরি করে সে অনুযায়ী পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব। পড়ার রুটিন একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সম্পর্কে না জানাটা বোকামি। বুদ্ধিমানের কাজ হবে পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম এবং ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন সম্পর্কে জানা এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন তৈরী করে পড়া। পড়া রুটিন সুন্দর করে তৈরি করে পড়ার টেবিলের সামনে ঝুলিয়ে রাখা।
এর ফলে প্রতিবার রুটিনের দিকে চোখ পড়লেই আপনার ব্রেনে সিগনাল দিবে যে এখন কি করতে হবে। ফলে আপনার সময়ের অপব্যবহার হবে না। চলুন জেনে আসি পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম, পড়ার রুটিনের উপকারিতা, কিভাবে পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা যায় ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে।
ভূমিকা
পড়াশোনা আমাদের জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য পড়াশোনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ভালোভাবে পড়াশোনা করার জন্য আমাদের পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম জানা দরকার এবং একজন ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে অবগত হওয়া উচিত। একটি গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, যারা ভালো শিক্ষার্থী বা যারা পরীক্ষায় ভালো করেন তারা নিয়মিত ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন তৈরী করে পড়াশোনা করেন।
ভালো ছাত্র ছাত্রী হতে হলে রুটিন এর গুরুত্ব অপরিসীম। প্রথম শ্রেণী থেকে ভার্সিটি যেখানকার শিক্ষার্থী হয় না কেন সবারই পড়াশোনার জন্য রুটিন থাকা দরকার। পড়া রুটিন বানানো থাকলে সময়ের অপব্যবহার কম হয়। কোন কোন শিক্ষার্থী পড়ার রুটিন খাতায় লিখে টেবিলের সামনে লাগিয়ে রাখেন আবার কেউ কেউ নিজের ব্রেনেই তৈরি করে রাখে।
পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম
ভালো ছাত্র-ছাত্রীর জন্য রুটিন তৈরি করে পড়াশোনা করার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আমরা অনেকেই পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জানিনা। সকল ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ার রুটিন যে একই হবে এমনটি নয়। কেননা একেক জনের পছন্দ এক এক রকম হয়ে থাকে এবং পড়ার সময় সূচি ও আলাদা হতে পারে।
কেউ কেউ খুব ভোরে উঠে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন আবার কেউ দেরিতে উঠে পড়াশোনা করে। আবার কেউ অনেক রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন আবার কেউ তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েন। পছন্দ যেমনই হোক না কেন, পড়াশোনা একটি নিয়ম কানুনের বিষয় তাই পছন্দ আলাদা হলে ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই নিয়ম অনুসরণ করা উচিত। তবেই দৈনিন্দিন জীবনে এবং পরিক্ষাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
একজন শিক্ষার্থীর উচিত তার ক্লাস টাইম কে কেন্দ্র করে প্রতিদিনের পড়ার রুটিন তৈরি করা। কেননা আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস নির্ধারণ কয়েকটি শিফটে হয়ে থাকে। অনেকের মর্নিং শিফট, অনেকের ডে শিফট আবার অনেকেরই নাইট শিফটে ক্লাস হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে এক একজনের রুটিন একেক হবে এটাই স্বাভাবিক।
তবে পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম জেনে এমন ভাবে রুটিন তৈরী করা উচিত যাতে প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘন্টা পড়াশোনা করা যায়। আর পড়াশোনা সময় এমন নির্ধারন করা উচিত যাতে পরিবেশ আপনার অনুকূলে থাকে। সহজ ভাবে বলতে গেলে নিরিবিলি পরিবেশ এবং আপনার মনোযোগ কেবল মাত্র পড়াশোনায় মগ্ন থাকে। তাই চেষ্টা করুন ফরজেরর নামাজের পরের সময় টাকে কাজে লাগাতে।
রুটিন তৈরি করে কেন পড়বো এবং এর উপকারিতা কি
একজন শিক্ষার্থীর জন্য পড়াশোনার পূর্বে রুটিন তৈরি করার উপকারিতা অনেক। রুটিন ছাড়া পড়াশোনা করলে পড়াশোনা করলে তা যথাযথ হয় না। এছাড়া সকল রুটিন মাপিক পড়া ছাড়া সকল বিষয়ে সমান সময় দেওয়া যায়না। একজন ছাত্রের জন্য লেখাপড়ায় রুটিনের ভূমিকা কতটুকু বা এর উপকারিতা কি কি তা নিচে দেওয়া হল-
- পড়ার রুটিন একজন শিক্ষার্থীকে সময় জ্ঞান এবং সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষা দেয়।
- কোন সময়ে কোন কাজ করতে হবে তা শিখায়।
- রুটিন মাপিক জীবন যাপন একজন শিক্ষার্থীকে নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা বোধ শিখায়।
- পড়ার রুটিন একজন শিক্ষার্থীকে পড়াশোনায় মনোযোগী করতে সাহায্য করে।
- রুটিন মাফিক পড়াশোনা করায় এটি শিক্ষার্থীকে ভালো রেজাল্ট করতে সাহায্য করে।
- অনেক সময় শিক্ষার্থী তার পছন্দের কোন সাবজেক্টকে বেশি প্রাধান্য দেই আর যে বিষয়ে সে দুর্বল সেই সাবজেক্টকে কম পড়াশোনা করে কিন্তু পড়ার রুটিনে সকল বিষয় উল্লেখ থাকায় প্রতিটি বিষয়ে সমানভাবে পড়া হয় ফলে দুর্বলতা দূর হয়ে যায়। এ থেকে বোঝা যায় যে পড়ার রুটিন তৈরি করে পড়াশোনা করার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার মন্ত্র - সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ক্লাস করা একজন শিক্ষার্থীর রুটিনে কি কি বিষয় থাকবে
পড়া রুটিন বানানোর নিয়ম জানা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার মন্ত্র বলে কিছু নেই। আপনাকে নিয়মিত পড়াশোন করতে হবে। নিয়মিত রুটিন মাপিক পড়াশোনা করতে হবে। ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত তা আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। নিচে একজন শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন কাজের তালিকা বা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার মন্ত্র তুলে ধরা হলো-
- সর্বপ্রথম কাজ হলো ইবাদত করা। একজন মুসলিম শিক্ষার্থীর আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য যথাসময়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করবে।
- প্রতিদিন কিছু সময় ধরে কোরআন তেলাওয়াত করা একজন মুসলিম শিক্ষার্থীর জীবনের একটি বড় অংশ। এছাড়াও হাদিস অধ্যয়নের মাধ্যমে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
- একজন শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যপুস্তক অধ্যায়ন করবে।
- অন্যান্য বিষয় যেমন সাধারণ জ্ঞান চর্চা, পত্রিকা পড়া এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খবরা-খবর সম্পর্কে জানা ইত্যাদি অধ্যায়ন করা ভালো।
- নিয়মিত খেলাধুলা করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- এছাড়া শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ব্যায়াম বা শরীর চর্চা করা।
- সময় মত খাবার গ্রহণ করতে হবে।
- পারিবারিক কাজে সহযোগিতা করতে হবে এতে করে পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
- বিভিন্ন সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজে অংশগ্রহণ করা।
- অপ্রয়োজনীয় কাজের জন্য সময় ব্যয় না করা।
- মানসিক প্রশান্তির জন্য কিছু সময় ঘুরতে বের হওয়া বা ভালো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো।
দৈনন্দিন পড়ার রুটিন - রুটিন অনুযায়ী লেখাপড়া এবং অন্যান্য কাজের সময়সূচী
ভালো রেজাল্ট করতে হবে প্রতিদিন রুটিন অনুযায়ী পড়ার কোন বিকল্প নেই। রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করলে আপনার দিনটি গোছালো হয়। পড়াশোনা যেমন ঠিকভাবে হয়, তেমনি দিনের অন্যান্য কাজ গুলোও সঠিক এবং যথা সময়ে হয়ে থাকে। তাই চেষ্টা করুন দৈনন্দিন পড়ার রুটিন তৈরী করার। চলুন জানি দৈনন্দিন পড়ার রুটিন সম্পর্কে-
- রুটিন অনুযায়ী ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ফজর সালাতের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পড়াশোনা করুন। এরপর মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে সালাত আদায় করুন, এতে মনে প্রশান্তি থাকবে।
- সালাত আদায় শেষ করার পরে মসজিদে বসে বা বাসায় এসে কমপক্ষে এক পৃষ্ঠা কোরআন তেলোয়াত করা এবং তার অর্থ পড়া। এর সাথে সাথে কমপক্ষে একটি হাদিস মুখস্ত করা। প্রত্যেক মুসলিম শিক্ষার্থীর ঘরে কুরআন এবং হাদিসের বই থাকা উচিত তবে অন্যান্য বই থেকে এই বইগুলোকে সম্মানের সাথে ভালোভাবে রাখতে হবে।
- কোরআন এবং হাদিস পাঠ করার পরে বাইরে যেয়ে কিছু সময় হাটাহাটি করা বা ব্যায়াম করা।
- এরপর ফ্রেশ হয়ে হালকা কিছু নাস্তা করা।
- নাস্তা শেষ করার পরে একটানা মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করা।
- সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে গোসল, সকালের নাস্তা, স্কুল ড্রেস পরিধান করতে হবে।
- এরপর স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিন।
- ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে এবং ক্লাসের পড়া ক্লাসের সম্পন্ন করার চেষ্টা করতে হবে।
- টিফিন পিরিয়ডের জোহরের সালাত আদায় করে টিফিন শেষ করুন। এরপর পরবর্তী ক্লাসের জন্য প্রস্তুতি নেন।
- ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে ক্লাসের নোটস বা লেকচার নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করুন।
- ক্লাস শেষে সময় মত বাসায় চলে আসুন।
- বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে দুপুরে খাবার গ্রহণ করুন। খাবার শেষ করে আসলে সালাত পর্যন্ত বিশ্রাম নিন।
- বিশ্রাম নেওয়ার পরে যথাসময়ে উঠে আসরের সালাত আদায় করুন।
- আসর সালাতের পর থেকে মাগরিব সালাত পর্যন্ত সময়টুকু খেলাধুলা করে, ঘুরে বেড়ানো, ভালো বন্ধু বা পরিবারের সাথে গল্প করা ইত্যাদি করতে পারেন।
পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার উপায় - কিভাবে পড়াশুনা করলে ভালো রেজাল্ট করা যায়
- মাগরিবের আজানের পর মসজিদে গিয়ে সালাত আদায়ের শেষ করে বাসায় এসে হালকা নাস্তা করে একটানা এশার সালাত পর্যন্ত পড়াশোনা করুন।
- এশার আজান হলে মসজিদে গিয়ে সালাত আদায় করুন।
- সালাত আদায় শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে নিন।
- রাতের খাবার খাওয়া শেষ করে একটানা ৯:৪৫ বা ১০ টা পর্যন্ত পড়াশোনা করুন।
- পড়া শেষে আধা ঘন্টা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করুন।
- রাত সাড়ে দশটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ুন। কেননা রাত জেগে পড়াশোনা করে লাভবান হওয়া যায় না। রাত জেগে পড়াশোনা না করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন এবং ভোরে উঠে পড়াশোনা করুন এতে বহুৎ উপকারিতা রয়েছে। ইসলাম এবং চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং সকালে তাড়াতাড়ি উঠা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- ছুটির দিনগুলোতে রুটিন সামান্য পরিবর্তন করতে পারেন, তবে অন্যান্য দিনগুলোর মত ছুটির দিনগুলোতেও পড়াশোনার রুটিন ঠিক রাখতে হবে, কেননা পরের দিনের ক্লাসের পড়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
- যেহেতু ছুটির দিনে স্কুল বন্ধ থাকে, তাই এই দিনে কিছু ব্যক্তিগত কাজ করা যেতে পারে যেমন- চুল এবং হাত পায়ের নখ কাটা, প্রয়োজনেও কোন কিছু কেনাকাটা করা, পারিবারিক বা অন্য কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা, দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া এছাড়াও সামাজিক বিভিন্ন কাজের অংশগ্রহণ করা যেতে পারে।
ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন - পড়াশোনা করার রুটিন এক নজরে-
পরীক্ষায় ভালো করার জন্য একজন শিক্ষার্থীকে যে বিষয়গুলো অবশ্যই বর্জন করতে হবে-
- নেশা জাতীয় দ্রব্য বা ধূমপান পরিহার করা।
- মোবাইল, ফেসবুক, চ্যাট করা, ইউটিউব, ভিডিও গেমস সহ অন্যান্য গেমস থেকে দূরে থাকা।
- বাজে আড্ডা দেওয়া বা অসঙ্গ ত্যাগ করা।
- আপনার সময় নষ্ট হয় এমন বিষয় থেকে দূরে থাকা।
৫ ঘন্টা পড়ার রুটিন - রুটিন ফলো করার সময় যেগুলো করবেন
পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম জেনে আপনি যে রুটিন তৈরি করেছেন তা ফলো করার সময় তিনটি জিনিস করতে হবে। একজন ভালো আদর্শ ছাত্রের দিনে কমপক্ষে ৫ ঘন্টা পড়া উচিত। রুটিন নিজের সুবিধা মত সময় অনুযায়ী তৈরী করার চেষ্টা করুন। নিম্নে যে তিনটি জিনিস একজন শিক্ষার্থীর করা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করা হলো-
কোন বিষয়ের কঠিন জিনিস পড়ার পর সহজ জিনিস পড়ুন। আবার কঠিন আবার সহজ এভাবে। এভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়াশোনা করলে আপনার মনে পড়াশোনা নিয়ে বিরক্তি আসবে না। এবং আপনি খুব সহজে বিষয়গুলি বুঝতে পারবেন। আর এই বিষয় পরিবর্তন করে পড়ার বিষয়টি আপনাকে পড়ার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করবে।
শান্ত জায়গায় পড়াশোনা করুনশান্ত মনোরম পরিবেশে পড়াশোনা করুন যেখানে কেউ আপনাকে বিরক্ত করবে না। যত মনোরম পরিবেশের রুটিন মাফিক পড়াশোনা করবেন তত খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি বিষয়গুলো বুঝতে পারবেন। এছাড়া পড়ার সময় এমন ভাবে নির্ধারণ করুন যাতে আপনি একটি শান্ত ও মনোরম পরিবেশ পেয়ে থাকেন।
মোবাইল ফোন পড়াশোনা মনোযোগ নষ্ট করার প্রধান কারন। পড়াশোনা করার সময় মোবাইল ফোন ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ কেননা মোবাইল ফোন কাছে থাকলে সারাক্ষণ ঘাটতে ইচ্ছে করে। এতে পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায় এবং আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। তাই চেষ্টা করুন পড়ার সময় মোবাইল ফোন আপনার পড়ার টেবিল থেকে দূরে রাখার এবং সাইলেন্ট মুডে রাখার।
৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন
প্রতিদিন ৮ ঘন্টা পড়া অনেকের জন্য কষ্টসাধ্য বিষয়। যা অনেকেই শুরু করতেই পারেন না। অনেকেই রয়েছে যারা শুরু করলেও প্রথম কিছুদিন রুটিন মাপিক পড়াশোনা করলেও ধীরে ধীরে তা হারিয়ে যেতে শুরু করে। তাই প্রতিদিন ৮ ঘন্টা পড়াশোনা করতে হলে আপনাকে এমন ভাবে সময় ভাগ করে নিতে হবে।
যেই সময় গুলোতে আপনার ক্লান্তি আসবে না এবং মনোযোগ দীর্ঘ সময় পযর্ন্ত ধরে রাখা যায়। আপনি যদি প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে পড়াশোনা করতে চান তাহলে নিচে দেওয়া রুটিন মাপিক আপনার সময় ভাগ করে নিন এবং কোন কোন বিষয় গুলো কোন সময়ে পড়লে বেশি মনে থাকবে, সহজে আয়ত্ব করতে পারবেন। চলুন জেনে নেই প্রতিদিন ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন সম্পর্কে-
ভোর থেকে সকাল পযর্ন্ত : ৪ ঘন্টা
প্রতিদিন আপনাকে ৪ ঘন্টা সময় সকাল বেলা কাজে লাগাতে হবে। সেজন্য আপনাকে ভোর ৪ টা থেকে ৫ টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হবে। পড়ার শুরুতে বা পড়ার মাঝে ফজরের সালাত আদায় করতে হবে। এই সময়টাতে চারিপাশে অনেক নিরিবিলি থাকে বিধায় এই সময় পড়া মনোযোগ থাকে এবং পড়া সহজেই মনে থাকে।
এই সময়ে আপনি মনে মনে পড়া যায় এমন বিষয়গুলো পড়ার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে এই সময় অংক করতে পারেন। অংক যেহেতু বোঝার বিষয়, সেহেতু ঘুম থেকে ওঠার পড়ে আপনার মস্তিষ্ক অনেক ভালো কাজ করে। তাই এই সময় অংক বা গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলো নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। এই সময় ইংরেজি ও পড়া যেতে পারে। ২ ঘন্টা অংক মাঝে একটি ১৫ মিনিটের বিরতি দিয়ে ২ ঘন্টা ইংরেজি পড়তে পারেন।
সন্ধাকালীন ১ ঘন্টা:
মাগরীবের নামাজের পর থেকে শুরু করে এশার নামাজের আগে পযর্ন্ত ১ ঘন্টা অন্য যে কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন। এই সময় চেষ্টা করুন আপনার যে বিষয়গুলো অনেক সহজ মনে হয়, সেই বিষয়গুলো পড়ার। সারাদিনের ক্লাসের পেরেশানি ও ক্লান্তি শেষে সহজ বিষয়টি পড়া সবচেয়ে বুদ্ধি মানের কাজ।
এশার নামাজ পর খাওয়া শেষে ৩ ঘন্টা:
এই সময়টিতে আপনি আপনার গবেষণা করা সময় হিসেবে বেঁচে নিন। সারাদিনে ক্লাসে কি কি বিষয় পড়া হয়েছে, আপনি কোন বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন এবং কোন বিষয়গুলো বুঝতে পারেননি তা আলাদা করার চেষ্টা করুন। যে বিষয়গুলো অধিকতর কঠিন মনে হয় তা নিয়ে চিন্তা করুন এবং বেশি বেশি করে লেখার চেষ্টা করুন।
লেখকের মন্তব্য
আশা করি উপরের কনটেন্ট থেকে পড়ার রুটিন বানানোর নিয়ম এবং রুটিন অনুযায়ী কিভাবে পড়াশোনা করতে হবে এবং ভালো ছাত্রদের পড়ার রুটিন কেমন হবে তা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি ভালো কিছু করতে চান তাহলে আজকেই পড়ার রুটিন বানিয়ে ফেলুন এবং রুটিন মাফিক ৮ ঘন্টা পড়ার রুটিন করে পড়াশোনা করলে আপনি দেখবেন যে আগের চাইতে অনেক ভালোভাবে যেকোন বিষয় জানতে ও শিখতে পারছেন এবং আপনার সময় অনেক কম লাগছে।
এতক্ষণ ধরে আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। এরকম তথ্যবহুল ও আপনার কাছে ভালোলাগা আরো অনেক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েব সাইটটি বেশি বেশি ভিজিট করুন, কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত দিন এবং শেয়ারের মাধ্যমে অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url