কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় জেনে নিন বিস্তারিত
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি, আপনারা সকলে ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই জানতে চান কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় এবং কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায়। আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা লম্বা হওয়ার যাবতীয় তথ্য আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
পুরো আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় এবং কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।তাছাড়া আপনারা আরো জানতে পারবেন কি খেলে লম্বা হওয়া যায়, লম্বা হওয়ার লক্ষণ, ১৮ বছর পর কি লম্বা হওয়া যায়, কমপ্লেন খেলে কি লম্বা হয়, কিভাবে ঘুমালে লম্বা হওয়া যায়, ৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায় এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত।
৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায়:
আপনারা অনেকে জানতে চান ৭ দিনে লম্বা হওয়া উপায় আছে কিনা। আসলে সোজা কথায় ৭ দিনে লম্বা হওয়া কোন উপায় নেই। কিন্তু এমন কিছু কাজ বা ব্যায়াম আছে যা মানুষকে কিছুটা লম্বা ও সোজা দেখাতে সহায়তা করে। আপনি চাইলে প্রত্যেক দিন ব্যায়াম বা যোগব্যায়াম করতে পারেন যা আপনার মেরুদন্ডকে নমনীয় এবং শরীর প্রসারিত করতে সাহায্য করে। লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত জরুরী।
যেমন দুধ ডিম মাছ মাংস ইত্যাদি খাবার প্রত্যেক দিনের প্রোটিনের চাহিদা চাহিদা পূরণ করে থাকে। তার সাথে পর্যাপ্ত পানি পান, সবুজ শাকসবজি ও ফল এ সকল খাবার হাড় শক্ত এবং শরীরের গঠনে সাহায্য করে। তাছাড়া প্রতিদিন ৮-৯ ঘণ্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরী শারীরিকভাবে লম্বা হওয়ার জন্য। তার কারণ রাতের ঘুমানোর সময় আপনার শরীরের গ্রোথ হরমোন কাজ করে।
কি খেলে লম্বা হওয়া যায়:
প্রিয় পাঠক, আপনারা যারা কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চান তাদের সর্বপ্রথম কি খেলে লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানা উচিত। শারীরিকভাবে লম্বা হতে গেলে পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত জরুরী একটা বিষয়। লম্বা হওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন হয়। লম্বা হতে হলে কোন কোন পুষ্টি উপাদান এবং কোন কোন খাবারে এসব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
প্রোটিন জাতীয় খাবার:
প্রোটিন আমাদের শরীরের হার ও বেশি গঠনের সাহায্য করে। যে সকল খাবারে প্রোটিন অতিরিক্ত মাত্রায় থাকে সে সকল খাবারের মধ্যেদুধ,ডিম,মুরগি ,মাছ,বাদাম,সয়াবিন,ডাল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার:
লম্বা হতে এবং হাড় শক্ত করতে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের ভূমিকা অপরিসীম। ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার হাড় মজবুত রাখে এবং হাড়ের ডেনসিটি বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ক্যালসিয়াম এ ভরপুর খাবারের মধ্যে রয়েছে দই,দুধ,পালং শাক,ছানা,তিল,বাদাম,ছোট মাছ ইত্যাদি।
জিংক জাতীয় খাবার:
শরীরের গ্রোথ হরমোন কে ঠিকমতো কাজে লাগাতে জিংক বিশেষ ভূমিকা পালন করে। জিংক জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে কুমড়ার বীজ,মটরশুটি, বাদাম, ডিমের কুসুম, সূর্যমুখী বীিজ,দুগ্ধ জাতীয় খাবার , ডাল ও শিমজাতীয় খাবার ইত্যাদি।
আয়রন জাতীয় খাবার:
আয়রন জাতীয় খাবার আমাদের শরীরে রক্ত তৈরি করে এবং কোষে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়। যা হাড় ও পেশির গ্রোথে সাহায্য করে। আয়রন জাতীয় খাবারের মধ্যে বিশেষ করে সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, মুলা শাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাছাড়া ডাল ও মটরশুঁটি জাতীয় খাবার এবং ফলমূল যেমন খেজুর, কিসমিস, আঙ্গুর ইত্যাদি। মুরগির কলিজা, গরুর কলিজা ইত্যাদিতে ও প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয়ই কি খেলে লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন এবার আসুন কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায়:
আপনারা অনেকেই কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চান। সহজ কথায় বলতে গেলে আপনি খুবই দ্রুত লম্বা হতে পারবেন না। লম্বা হতে গেলে বিশেষ কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। লম্বা হওয়া অনেকটা নির্ভর করে জেনেটিক বিষয়ের উপর, খাবারের উপর,ঘুম এবং ব্যায়ামের উপর। তবে লম্বা হওয়ার কিছু কৌশল অবলম্বন করা যায় যার ফলে মানুষ কিছুটা লম্বা হতে পারে।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস:
দ্রুত লম্বা হওয়ার জন্য সঠিক খাদ্যাভাস একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছু খাবার আছে যা স্বাভাবিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় যা স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। কিছু খাবার যেমন প্রোটিন (দুধ ডিম মাছ মুরগি ডাল) ক্যালসিয়াম (দুধ, দ্ই, পনি্র , কলা , শাক সবজি ) ভিটামিন ডি (রোদে থাকা ,ডিমের কুসুম , ছোট মাছ ইত্যাদি) আয়রন ও জিংক (কলিজা ,বাদাম , শাকসবজি) খেলে স্বাভাবিকভাবেই শরীর সুস্থ থাকে এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং:
নিয়মিত কিছু ব্যায়াম করলে শরীর টানটান হয় এবং হাড়ের বৃদ্ধি ভালো হয়। যেমন, কপাল স্পর্শ করার মত স্ট্রেচিং , সাঁতার কাটা , দড়িলাফ ইত্যাদি ।
ভাল ভঙ্গি বজায় রাখা:
দাঁড়ানো বা বসার সময় ভালো ভঙ্গিমায় থাকতে হবে। সব সময় মেরুদন্ড সোজা রাখার চেষ্টা করতে হবে , কুঁজো হয়ে বসলে হাড় সঠিকভাবে বৃদ্ধি পায় না।
রোদে সময় কাটানো:
নির্দিষ্ট সময় নিয়ম মেনে রোদে থাকলে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয় যা হাড়ের বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী , এছাড়া শারীরিক সুস্থ বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য সূর্যের আলো অত্যন্ত উপকারী।
কৃত্রিম ঔষধ ও হরমোন এড়িয়ে চলা:
হাইট বাড়ানোর জন্য অনেকেই কৃত্রিম ঔষধ বা হরমোন ব্যবহার করে থাকেন যা শারীরিক বৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে , শারীরিক বৃদ্ধির সাথে হাড়ের বৃদ্ধির বিষয়টি জড়িত,কেবলমাত্র রেজিস্ট্রার ডাক্তারের পরামর্শ এবং নির্দেশনা অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা উচিত।
বয়স অনুযায়ী বিশেষ টিপস:
বয়স অনুযায়ী শারীরিক বৃদ্ধির বিষয়টি জড়িত যেমন কারো বয়স যদি ১৮ বছরের নিচে হয় স্বাভাবিকভাবেই তার শরীর বাড়বে সেই ক্ষেত্রে তাকে হাইট বৃদ্ধির জন্য কিছু নিয়ম এবং চার্ট মেনে চলতে হবে, তাই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যায়ামের একটি চার্ট এবং প্রতিদিনের খাবারের একটি চাট তৈরি করে সেটা ফলো করা উত্তম হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, শারীরিক সুস্থ বিকাশ এবং বৃদ্ধির জন্য সবারই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের প্রয়োজন যা রোগ প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়াও শারীরিক দ্রুত বৃদ্ধিতে নিচের বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে,পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান , দুধে হলুদ মিশিয়ে খাওয়া , দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার এড়ানো , উঁচুতে কিছু ঝুলিয়ে রেখে প্রতিদিন ধরার চেষ্টা করা , প্রতিদিন সূর্যের আলোতে ২০ থেকে ৩০ মিনিট থাকা , নিয়মিত সাঁতার কাটা যা শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য খুব ভালো ব্যায়াম। আশা করি, কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় শেষ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন।
কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায়:
কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায় এই বিষয়ে আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে এটির তারতম্য দেখা যায়। যদি খাদ্যাভ্যাস ঠিক থাকে, হরমোন ঠিক মতো নিঃসৃত হয় , পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় তাহলে ছেলেদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ হতে পারে। এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে শারীরিক লম্বা হওয়ার বিষয়টি সাধারণত ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
ছেলে ও মেয়েদের লম্বা হওয়ার ব্যায়াম:
ছেলেদের মত মেয়েদের ও লম্বা হওয়ার কিছু কৌশল এবং ব্যায়াম আছে যা সাধারণত মেয়েদের বয়সন্ধিকালে তথা ১০ থেকে ১৬ এবং সর্বোচ্চ ১৮ বছরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। মেয়েদের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম এবং কৌশলের কথা বলা হলোঃ
- হ্যাং করা: দড়ি বা রড ধরে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড করে ঝুলে থাকা পাঁচ থেকে সাত বার।
- কোবরা স্টেজ: পেটের উপর ভর দিয়ে শরীর উপরের দিকে উঠানোর চেষ্টা করা, এতে মেরুদন্ড টানটান হয় এবং হাড় বড় হতে সহায়তা করে।
- টাচ ইউর টো: মা সোজা রেখে সামনের দিকে ঝুঁকে পায়ের দুই বৃদ্ধাঙ্গুলি স্পর্শ করার চেষ্টা করা।
- সাঁতার কাটা: শারীরিক সুষ্ঠু বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই সাঁতার কাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম, শরীরের প্রতিটি অংশ প্রসারিত হয় বিশেষ করে হাত এবং পা।
- নিয়মিত যোগা ব্যায়াম করা: যোগা ব্যায়াম মেয়েদের বৃদ্ধি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
কমপ্লেন খেলে কি লম্বা হওয়া যায়:
প্রিয় পাঠক, সকলেরই একটি কমন প্রশ্ন থাকে কমপ্লেন খেলে কি লম্বা হওয়া যায়? কমপ্লেন একটি জনপ্রিয় নিউট্রিশনাল ড্রিঙ্ক। যা শিশুদের এবং কিশোরদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। কমপ্লেনে থাকা প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি শরীরে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরের বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে থাকে।
কমপ্লেন কাউকে সরাসরি লম্বা করে না। তবে এটি যদি সঠিক বয়সে, সঠিক নিয়মে, সঠিক পরিমাণে এবং পুষ্টিকর খাবারের সাথে গ্রহণ করা যায় তাহলে এটি শরীরের বৃদ্ধি প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে সাহায্য করে। এটি চোতা বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয় কিন্তু কমপ্লেন খেলেই যে শুধু আপনি লম্বা হবেন এটা আশা করা ভুল।
যখন আপনার ৮ থেকে ১৮ বয়স এবং খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিন ও ভিটামিন থাকে না নিয়মিত ব্যায়াম ও ঘুম হয় না এরকম সময়ে আপনি কমপ্লেন খেলে তা আপনার শারীরিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায় ভূমিকা রাখতে পারে। শুধুমাত্র কমপ্লেন আপনার শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। এটি শুধুমাত্র একটি সাপ্লিমেন্ট ।
এটি অতিরিক্ত খাওয়া আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। শুধুমাত্র কমপ্লেন খেলেই যে কেউ ছয় ফুট উচ্চতা সম্পন্ন হতে পারে তা আশা করা একদম ঠিক নয়। তবে আপনি যদি দুধের সঙ্গে কমপ্লেন খান এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করেন তাহলে সেটা আপনার শারীরিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর হয়ে থাকে।
তার সাথে ৮-১০ ঘণ্টা ঘুম এবং ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার গ্রহণ করা বেশ জরুরি। আশা করি, কমপ্লেন খেলে কি লম্বা হওয়া যায় এই প্রশ্নের উত্তর আপনারা এতক্ষণে পেয়ে গেচেন। এবার আসুন কিভাবে ঘুমালে লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
কিভাবে ঘুমালে লম্বা হওয়া যায়:
প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলের উপরের অংশে আমরা জেনেছি কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায়। এখন আমরা আলোচনা করব কিভাবে ঘুমালে লম্বা হওয়া যায়। এবং ঘুমের সাথে লম্বা হওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কিনা এটি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের শরীর থেকে গ্রোথ হরমোন অনেক বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হয়। গ্রোথ হরমোন আমাদের শরীরের হাড় ও মাংসপেশির গঠন ও লম্বা হওয়ায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
গভীর ঘুম না হলে এই হরমোনের নিঃসরণ কমে যায় ফলে লম্বা হওয়া ব্যাহত হতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে শরীর ক্লান্ত হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন কোষ ঠিকমত কাজ করে না এর ফলে শরীরে স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এখন আসুন আপনি কিভাবে ঘুমাবেন যাতে আপনার উচ্চতা বাড়তে সাহায্য করে সে সম্পর্কে আলোচনা করি।
পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঘুমান:
বয়স অনুযায়ী যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয় তাহলে শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। তাই বয়স অনুযায়ী ঘুমের সময় নির্ধারণ করা উচিত। বিশেষ করে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ৬-১২ বছর বছর বয়সের বাচ্চাদের দিনে ৯-১১ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। আবার ১৩-১৮ বছর বয়স পর্যন্ত দিনে ৮-১০ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। আপনি যদি ১৮ বছর বা তার ঊর্ধ্বে হয়ে থাকেন তাহলে দিনে ৭-৯ ঘন্টা ঘুমানো অত্যন্ত জরুরী।
সোজা হয়ে ঘুমান:
সব সময় সোজা হয়ে ঘুমানো বা পিঠ সোজা রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এর ফলে ঘাড় ,মাথা ও মেরুদন্ড সোজা থাকে ফলে হাড়ের স্বাভাবিক বৃদ্ধি সহজ হয়।
বিছানা ও বালিশ ব্যবহারে সতর্কতা:
আমাদের মধ্যে অনেকেই খুব নরম বিছানা পছন্দ করে থাকি। কিন্তু বেশি নরম বিছানা আপনার শরীরকে বাঁকা করে দিতে পারে ।হালকা বালিশ ও মাঝারি শক্ত বিছানায় ঘুমানো সবথেকে ভালো উপায় শারীরিকভাবে লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে।
ঘুমানোর পূর্বে ডিভাইস ও লাইট বন্ধ রাখুন:
আপনার ঘরের আলো বা মোবাইল অথবা অন্য যেকোনো ডিভাইসের ব্লু লাইট ব্রেনের ঘুমের হরমোন কমিয়ে দেয়। এর ফলে আপনার গভীর ঘুমে যাওয়া কঠিন হয়ে যায় এবং গ্রোথ হরমোন কম নিঃসৃত হয়ে থাকে যা আপনার শারীরিকভাবে লম্বা হওয়া ব্যাহত করতে পারে।
প্রতিদিন ঘুমের রুটিন ঠিক রাখুন:
প্রতিদিন একই সময় ঘুমোতে যাওয়া আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরী। আপনি প্রতিদিন একই সময় ঘুমাবেন এবং একই সময়ে জেগে উঠবেন এতে আপনার পর্যাপ্ত ঘুমের চাহিদা পূরণ হবে এবং গ্রোথ হরমোন সঠিকভাবে কাজ করবে। তাই নিঃসন্দেহে আমরা বলতে পারি ঘুম লম্বা হওয়ার একটি গোপন শক্তি। তাই নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুমালে আপনার শরীর নিজেই সর্বোচ্চ উচ্চতা অর্জনে সক্ষম হবে ইনশাআল্লাহ।
লম্বা হওয়ার লক্ষণ:
আসলে লম্বা হওয়া ধীরগতির একটি চলমান প্রক্রিয়া । তাই একদিন , এক সপ্তাহ বা এক মাসে আপনি বুঝতে পারবেন না যে আপনার উচ্চতা বাড়ছে কিনা। তবে কিছু লক্ষণ দেখলে আন্দাজ করা যায় যে আমাদের উচ্চতা বাড়ছে এবং বাড়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। লম্বা হওয়ার লক্ষণগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- আপনি যদি হঠাৎ দেখেন যে আপনার জামা, কাপড় বা শার্ট, প্যান্ট ছোট হয়ে যাচ্ছে বা গায়ের সাথে ফিট হয়ে যাচ্ছে তবে বুঝতে হবে আপনি লম্বা হচ্ছেন।
- যখন কেউ শারীরিকভাবে লম্বা হতে থাকে তখন হাঁটুতে হালকা ব্যথা হয় যাকে বলা হয় গ্রোথ পেন। হাঁটুতে ব্যথা অনুভূত হলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি লম্বা হচ্ছেন।
- যখন কেউ লম্বা হতে থাকে তখন ঘনঘন ক্ষুদা পায়। তার কারণ এই সময় শরীরে বাড়তি পুষ্টির চাহিদা থাকে যার ফলে ঘনঘন ক্ষুধা পায়।
- যখন শরীরের হাড়ের বৃদ্ধি শুরু হয় তখন পায়ের হাড়েরও বৃদ্ধি হয় পরে জুতা বা স্যান্ডেল ছোট হয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- শারীরিকভাবে লম্বা হওয়ার সময়টাতে শরীর অনেক ক্লান্ত থাকে যার ফলে ঘনঘন ঘুম পায় বা ঘুমের পরিমাণ বেড়ে যায়। এ লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি লম্বা হচ্ছেন।
- তাছাড়া শরীর একটু হালকা লম্বাটে দেখানো হাত-পা, গলা, আঙ্গুল একটু লম্বা দেখাতে পারে।
আশা করি, লম্বা হওয়ার লক্ষণ গুলো কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে আপনারা ধারণা পেয়েছেন। এবার আসুন ১৮ বছর পরে কি লম্বা হওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
১৮ বছর পরে কি লম্বা হওয়া যায়:
প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই জানতে চান ১৮ বছর পরে কি লম্বা হওয়া যায়? এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা আপনাদের বলতে পারি হ্যাঁ যাই কিন্তু খুবই সীমিত আকারে। তার কারণ ১৮ বছর বয়স পর হাড়ের গ্রোথ স্বাভাবিকভাবে কমতে থাকে। কিছুটা বলতে গেলে হাড়ের গ্রোথ বন্ধ হয়ে যায়। তবে সবার শরীর আলাদা কেননা কেউ অল্প বয়সে লম্বা হয়ে যায় আবার কেউ দেরিতে লম্বা হয়। কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায় সেই বিষয়ে আমরা এই আর্টিকেলের উপরের অংশে আলোচনা করেছি।
আপনি যদি উপরের অংশ মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনারা সে সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন।সাধারণত ছেলেরা ২১ বছর পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ১৮ বছর পরও কিছুটা লম্বা হওয়া সম্ভব তার জন্য আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। সব সময় মেরুদন্ড সোজা করে হাটা বসা ইত্যাদির অভ্যাস করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার শারীরিকভাবে লম্বা হওয়ার ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সাঁতার কাটা, ব্যাডমিন্টন খেলা এবং পর্যাপ্ত ঘুম ১৮ বছর পরেও আপনাকে লম্বা হতে সহায়তা করতে পারে। এ সকল বিষয়ে আর্টিকেলের কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় এই অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা আছে। আপনি যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই লম্বা হওয়ার বিষয়ে সকল তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পেরেছেন।
লেখক এর মন্তব্য :কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায়
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে অবশ্যই আপনারা অবগত হতে পেরেছেন কিভাবে দ্রুত লম্বা হওয়া যায় সে বিষয় সম্পর্কে। তাছাড়া কত বছর বয়স পর্যন্ত লম্বা হওয়া যায়, কি খেলে লম্বা হওয়া যায়, কিভাবে ঘুমালে লম্বা হওয়া যায় , ১৮বছর পর কি লম্বা হওয়া যায় ,৭ দিনে লম্বা হওয়ার উপায় , লম্বা হওয়ার লক্ষণ, কমপ্লেন খেলে কি লম্বা হওয়া যায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন। আর এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার বিশেষ কোনো মতামত থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। এরকম নিত্য নতুন তথ্য পেতে সর্বদা আর আর ডায়েরির সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url