শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়-হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়

প্রিয় পাঠক,বর্তমান সময়ে মানুষ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। তার মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম। আপনারা অনেকেই গুগলের কাছে জানতে চান হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় এবং হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে। আজ এই আর্টিকেলে আমরা শ্বাসকষ্ট কি, শ্বাসকষ্ট কেন হয়, করণীয় কি এবং কি ওষুধ খেতে হয় সকল বিষয়ে আলোচনা করব।
শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়
পুরো আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় এবং হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাছাড়া আপনারা আরও জানতে পারবেন শ্বাসকষ্ট কি, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়ার কারণ, শ্বাসকষ্ট হলে কি খাওয়া উচিত না, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট কিসের লক্ষণ, বাচ্চাদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি শ্বাসকষ্ট হলে কি খেলে ভালো হয় এ সকল বিষয় বিস্তারিত। শ্বাসকষ্ট সম্পর্কে সকল বিষয়ে তথ্য পেতে আমাদের সাথে থাকুন।

শ্বাসকষ্ট কি:

শ্বাসকষ্ট হচ্ছে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া এবং শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়া। শ্বাস প্রশ্বাস নিতে গেলে বুক ও নাকে চাপ পড়া। এ সময় জোরে শ্বাস নিতে গেলে নাকে দুই পাশ ফুলে যায় এবং বুকের ভেতরে অস্বাভাবিক ঘড় ঘড় শব্দ হয়। এ সময় শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন না পাওয়ার ফলে ঠোট নীলচে হয়ে যায়, অতিরিক্ত ঘাম হয় এবং মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ না করাই মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সাধারণত ফুসফুসে যখন ঠিকমতো বাতাস ঢুকতে বা বের হতে পারে না তখনই শ্বাসকষ্ট হয়। এটা হতে পারে হাঁপানি, নিউমোনিয়া, অ্যালার্জিক রিয়েকশন বা গলায় কিছু আটকে যাওয়ার ফলে। অনেক সময় পরিবেশগত কারণ ধুলো ময়লা, মানসিক চাপ বা ভয় ইত্যাদির কারণে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।আজকের আলোচনার মূল বিষয় হল শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় সে সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকুন।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়:

প্রিয় পাঠক, আপনারা অনেকেই হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে কি করবেন এবং করণীয় কি সে সম্পর্কে জানতে চান। হঠাৎ যদি শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে আপনি কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন যা আপনাকে শ্বাসকষ্ট থেকে দ্রুত আরাম দিতে সাহায্য করবে। আসুন হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়

  • যতখানি সম্ভব মাথার নিচে বালিশ দিয়ে মাথার দিকটা উঁচু করে যে কোন এক কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে।
  • বারবার এপাশ ওপাশ ঘুরে শোয়ার কথা বলেন ডাক্তাররা। একদিকে কাত হয়ে বেশিক্ষণ শুয়ে না থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
  • এ সময় গরম পানীয় যেমন চা-কফি পান করলে অনেক সময় শ্বাসনালী খুলতে সাহায্য করে।
  • দেওয়াল থেকে কিছুটা দূরত্বে পা রেখে দেওয়ালে শরীল হেলান দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট অনেকটা কমে যায়।
  • চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় একটি টেবিলের উপর বালিশ রেখে তাতে মাথা নিচু করে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • যেসব রোগীরা ইনহেলার ব্যবহার করেন তাদেরকে দ্রুত ইনহেলার এর মাধ্যমে কমপক্ষে পাঁচটি চাপ নিতে হবে এবং প্রতিটি চাপে ধীরে ধীরে কয়েকবার নিঃশ্বাস টেনে নিতে হবে।
  • এরপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে হবে তারপরও যদি শ্বাসকষ্ট না কমে তাহলে ইনহেলারের চাপ আবারো নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রোগীকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নিতে হবে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়ার কারণ:

শ্বাস নিতে অসুবিধা শ্বাসকষ্টের একটা উপসর্গ যা হাঁপানি,হার্ট বা ফুসফুসের মত বিভিন্ন অবস্থায় প্রকাশ পেতে পারে। বিশেষ করে অধিক পরিশ্রম, পরিবেশগত কারন, উদ্বেগ ইত্যাদি কারণে শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এটি কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বিভিন্ন কারণে হতে পারে নিচে বিশেষ কিছু কারণ তুলে ধরা হলো
  • বিশেষ করে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ধুলাবালু , বায়ুদূষণ ইত্যাদি কারণে শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে।
  • যেহেতু শ্বাসকষ্ট ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ এটি ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে বেশি পরিলক্ষিত হয়। ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়।
  • বিশেষ করে শীতকালে শিশু ও বৃদ্ধদের মধ্যে নিউমোনিয়া জীবাণু দ্বারা এই শ্বাসকষ্টের প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এ সময় জ্বর কাশি এবং কফ হয় যা শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
  • প্রচন্ড এলার্জি থেকে শ্বাসনালী সংকুচিত হঠাৎ হয়ে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কোন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে হওয়া এলার্জি থেকেও শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে।
  • কখনো কখনো অতিরিক্ত পরিশ্রম শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
  • অতিরিক্ত উদ্বেগ , ভয় বা প্যানিক ডিসঅর্ডার থেকে শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা হয়ে থাকে।
  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন শ্বাসকষ্ট হওয়ার কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত স্থূলতা থেকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
  • তাছাড়া যেসব রোগীরা হৃদরোগ সমস্যায় ভুগছেন তাদের হার্টের সমস্যা জনিত কারণে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে।
আশা করি, হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হওয়ার কারণ সম্পর্কে আপনারা অবগত হতে পেরেছেন। এবার শ্বাসকষ্ট হলে কি খাওয়া উচিত না সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

শ্বাসকষ্ট হলে কি খাওয়া উচিত না:

সাধারণত অ্যালার্জিজনিত বা হাঁপানি শ্বাসকষ্টের জন্য এমন কিছু খাবার রয়েছে যা ক্ষতিকর। যেমন দুধ এবং দুগ্ধ জাত খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত বা তেলে ভাজা খাবার হজমের সমস্যা করে এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় তাই অতিরিক্ত তেলেভাজা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম ইত্যাদি শ্বাসকষ্ট বাড়াতে পাড়ে। তাছাড়া প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন ফাস্টফুড, চিপস ইত্যাদিতে প্রিজারভেটিভ থাকে যা অ্যালার্জি বা প্রদাহ কে বাড়িয়ে দিতে পারে। অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন যুক্ত খাবার থেকে বিরত থাকুন কারণ এটি ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

তাছাড়াও বিভিন্ন খাবার থেকে এলার্জি সমস্যা হয়ে থাকে এটা এক একজনের ক্ষেত্রে একেক রকম। তাই যাদের শ্বাসকষ্ট রয়েছে তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে কোন কোন খাবার খেলে এই সমস্যাটা বাড়ে এ সকল খাবার এড়িয়ে চলুন অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করুন।

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট কিসের লক্ষণ:

প্রিয় পাঠক, বর্তমানে বহু মানুষ শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভুগছেন। আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চান হঠাৎ শ্বাসকষ্ট কি বা কিসের লক্ষণ হতে পারে। এটা কি কোন বড় রোগের লক্ষণ বা পূর্বাভাস কি না সে সম্পর্কে আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। আসুন আমরা তাহলে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট কিসের লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করি। 

কারো যদি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায় যেমন বুকে ঘড় ঘড় শব্দ, কাশি, বুকে হঠাৎ চাপ ধরা ইত্যাদি সমস্যা হলে হাঁপানি সমস্যা রয়েছে বলে বুঝে নিতে হবে। তাছাড়া নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের সংক্রমণ জনিত কারণেও শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। এ সময় জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট অতিরিক্ত ক্লান্তি বোধ হয়। 
তাছাড়া কোন ঔষধের রিঅ্যাকশন বা খাবারের মাধ্যমে এলার্জি হয় যার ফলে শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হতে পারে। এ সময় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এলার্জি জনিত সমস্যা সমাধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া আপনারা অনেকেই জানেন হার্টের সমস্যায় হৃদপিণ্ড কাজ না করলে ফুসফুসে পানি জমে শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। 

হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হার্টের সমস্যার ও লক্ষণ হতে পারে। যেকোনো শারীরিক সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব প্রতিরোধ করা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যদি শ্বাসকষ্টের রোগী হন অথবা হঠাৎ আপনার শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সে সমস্যার সমাধান করুন। তা না হলে এটি অন্য কোন বড় রোগের লক্ষণও হতে পারে।

শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়:

বর্তমান সময়ে শ্বাসকষ্ট একটি খুবই সাধারণ সমস্যা। যা কেবলমাত্র বয়স্ক বা শিশুদের ক্ষেত্রে নয় যে কোন বয়সী মানুষের জন্য মারাত্মক সমস্যা।হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় সে সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান।তবে ঔষধ খাওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়
 সেটা হল শ্বাসকষ্ট কি বংশগত না হাঁপানির জন্য সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা দরকার। তাছাড়া এলার্জি ,হৃদরোগ , ঠান্ডা লাগা, বা অন্য কোন সমস্যা যেমন ধুলোবালির কাজ করা বা বিরূপ পরিবেশে থাকার জন্য হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। হাঁপানি বা এলার্জিজনিত শ্বাসকষ্ট হলে অবশ্যই সালবুটামল ইনহেলার (ভেন্টোলিন ) ২০ মিনিট পর পর প্রয়োজনে এক থেকে দুই বার নিতে হবে । 

এলার্জিজনিত হলে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ যেমন Fexofenadine ,Cetirizine ধরণের ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে নেওয়া যেতে পারে। রোগীর অবস্থা গুরুতর খারাপ হলে Steroid জাতীয় ঔষধ যেমন Prednisolone , Dexamethasone কেবলমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে নেওয়া যেতে পারে। 

বেশি মাত্রা শ্বাসকষ্টের রোগীকে শুইয়ে না রেখে পিঠের পিছনে বালিশ দিয়ে জানালার পাশে বসিয়ে দিতে হবে। এতে প্রশ্বাস নেওয়া অনেকটা সহজ হবে। অনেক সময় হাত পাখার সাহায্যে বাতাস দিলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায় । দই, রসালো খাবার ,অতিরিক্ত পানীয়,রোগীর এলার্জি হয় এমন খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।

তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী কোন ওষুধ নেওয়ার প্রয়োজন হলে তা নিতে হবে। আশা করি, শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় সে সম্পর্কে আপনারা অবগত হতে পেরেছেন। এবার আর্টিকালের নিচের অংশে আমরা বাচ্চাদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে আলোচনা করব।

বাচ্চাদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়:

আমাদের মধ্যে অনেকেই ছোট বাচ্চাদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকি।আর্টিকেলের উপরের অংশে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে আমরা জেনেছি।কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা শিশুদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে কি কি করতে হয়। সাধারণত ছোট বাচ্চাদের হাঁপানি, নিউমোনিয়া এবং এলার্জিক রিএকশন থেকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। 
তাছাড়া বাচ্চার শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গিয়েও শ্বাসকষ্ট হতে পারে এটি সবচেয়ে বিপদজনক। কিছু বাচ্চাদের আবার জন্মগত হৃদরোগের কারণেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আবার অনেক সময় বিষাক্ত গ্যাস বা ধোঁয়া অর্থাৎ কয়েল, ধুপ বা অন্যান্য জিনিস পুড়ে যাওয়ার ধোঁয়া থেকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে।আসুন হঠাৎ শিশুদের শ্বাসকষ্ট হলে আমাদের যা করণীয় সে সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
  • বাচ্চাদের হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে না শুয়ে বসানো অবস্থায় রাখার চেষ্টা করুন তাতে করে ফুসফুসে সহজে বাতাস ঢুকতে পারে।
  • এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন বাচ্চা জোরে কান্না না করে, কারণ কান্না করলে শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে।আর এ অবস্থায় কোনোভাবেই বাচ্চাকে উদ্বিগ্ন বা ভয় পাওয়া থেকে বিরত রাখুন।
  • ঘরের জানালা দরজা খুলে প্রয়োজন হলে ফ্যান চালিয়ে দিন যেন বাহিরের বাতাস ঘরের ভেতরে যাওয়া আসা করতে পারে।
  • অপরিষ্কার কোন জিনিস, সুগন্ধি, কয়েল বা ধুপ জাতীয় জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলুন।
  • যদি বাচ্চার আগে থেকেই অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে ইনহেলার বা নেবুলাইজার বাসায় থেকে থাকলে অতি দ্রুত ডক্টরের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার করুন।
  • সব থেকে ভালো হয় যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাচ্চাকে ঔষধ সেবন করান।

শ্বাসকষ্ট হলে কি খেলে ভালো হয়:

আমাদের আর্টিকেলের মূল আলোচনার বিষয় ছিল শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় যা আমরা উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। শ্বাসকষ্ট হলে কি খেলে ভালো হয় সে সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আপনার যদি হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হয় তাহলে এটি একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সংকেত । তবে শ্বাসকষ্টের প্রাথমিক অবস্থায় কিছু ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়ে খুব কম সময়ে আপনি একটু আরোগ্য লাভ করতে পারেন।
  • হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে আপনি হালকা গরম পানি পান করুন এটি শ্বাসনালী খুলতে সাহায্য করে। এবং গলা থেকে জমে থাকা কফ বের হতে সহায়তা করে।
  • তাছাড়া আদা ফুসফুসের জন্য খুবই উপকারী এটি ফুসফুসের প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসনালী প্রশস্ত করতে সাহায্য করে। আপনি যদি আদা, মধু্,লেবু ও লবঙ্গ দিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে খান তাহলে আপনি দ্রুত উপকার পাবেন।
  • তুলসী পাতা যার বিশেষ এন্টি অ্যাজমাটিক উপাদান এলার্জিজনিত শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা চিবিয়ে অথবা তুলসী পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন এতে শ্বাসকষ্ট দ্রুত কমে যায়।
  • হঠাৎ কারো শ্বাসকষ্ট হলে হালকা গরম পানিতে কিছুটা লবণ দিয়ে গার্গল করলে শ্বাসনালী দ্রুত পরিষ্কার হয় এবং শ্বাসকষ্ট থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • মধু এবং কালোজিরা গুণাবলী সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত রয়েছি। এক চা চামচ কালোজিরার গুড়া এক চা চামচ মধু এবং এক কাপ পরিমাণ হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে পান করলে শ্বাসকষ্ট থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
  • রসুন এ থাকে allicin যা হাঁপানি বাব প্রঙ্কাইটিস রোগীদের জন্য বেশ উপকারী। রসুন এ বিদ্যমান অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টি-ইনফ্লামেটরি চা দ্রুত ফুসফুসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। শ্বাসকষ্ট হলে২-৩ কোয়া রসুন চিবিয়ে খান অথবা গরম দুধে রসুন ফুটিয়ে খেলে শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • তবে কারো যদি এলার্জি সমস্যা থেকে থাকে তাহলে যে কোন ঘরোয়া উপায় ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখক এর মন্তব্য: শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয়

প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয়ই পুরো আর্টিকেলটি পড়ে শ্বাসকষ্ট হলে কি ওষুধ খেতে হয় এবং হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শ্বাসকষ্ট মূলত শরীরের একটি জটিল সমস্যা। এটি সাধারনত এলার্জিজনিত বা ঠান্ডা জনিত কারণে হয়ে থাকে। 

তবে এ সকল কারণ ছাড়াও এর অন্য বিশেষ কোনো কারণও থাকতে পারে। তাই শ্বাসকষ্ট সম্পর্কে আমাদের সকলেরই অবগত থাকা উচিত। এবং এই বিষয়কে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। কেননা কোন রোগই ছোট নয়। 

আর্টিকেলটি পরে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে তাদেরও পড়ার সুযোগ করে দিন। এরকম আরো বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেতে আমাদের এই ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করার অনুরোধ রইলো। আর্টিকেলটি সম্পর্কে যদি আপনার বিশেষ কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url