কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় জেনে নিন
প্রিয় পাঠক, আজ আপনাদের সাথে নতুন একটি টপিক কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করব। আজ আমরা আমাদের এই আর্টিকেলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে ও বিস্তারিত আলোচনা করব। এ সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন । তাছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়, চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়, চোখের নিচে কালো দাগ কোন রোগের লক্ষণ, বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়, টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়ঃ
সাধারণত চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় সে সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত রয়েছি। অতিরিক্ত কাজের চাপ, অবসাদ, মানসিক দুশ্চিন্তা , রাতে ঘুম না হওয়া চোখের নিচে কালো দাগ সৃষ্টি করে। আমাদের ত্বকের অন্যান্য অংশের চেয়ে চোখের নিচের ত্বক অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এইজন্য এই অংশটুকু খুব সহজেই প্রভাবিত হয় এবং কালচে দাগ পড়ে যায়।
তাছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে চোখের নিচে অংশে কালো ডার্ক সার্কেল করতে পারে। অনেক সময় চোখের এলার্জিজনিত কারণে অথবা পুষ্টিহীনতা কিংবা জেনেটিক কারণেও এই সমস্যা হয়ে থাকে।
তাছাড়া কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব তা জানার জন্য আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার সম্ভাব্য কিছু কারণ সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলোঃ
- ঘুমের অভাব বা নিদ্রাহীনতা একটি অন্যতম কারণ চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার পেছনে। কেননা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হলে ত্বক তার স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা হারায় এবং চোখের নিচে সংবেদনশীল অংশকে প্রভাবিত করে এবং কালচে দাগ দেখা দেয়।
- চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হতে পারে এলার্জির প্রতিক্রিয়া। যাদের চোখে এলার্জি জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের চোখ চুলকায় এবং বারবার ঘষে ঘষে চুলকানোর কারণে চোখের নিচে নরম অংশটুকুতে চাপ পড়ে যার ফলে কালো দাগ হতে পারে।
- তাছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবে ত্বকের কোলাজেন কমতে থাকে। যার ফলে চোখের নিচের অংশ আরো পাতলা হয়ে যায় এবং ডার্ক সার্কেল দেখা দিতে পারে।
- পানি শূন্যতা বা অতিরিক্ত ডিহাইড্রেশন থেকে আপনার চোখের নিচের অংশ কালো বা কালচে দাগ পড়তে পারে। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী আপনি পানি কম পান করলে চোখের নিচে বসে যায় এবং কালো দেখায়।
- তাছাড়া জেনেটিক্স কারণে অনেক সময় চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে। যেমন ধরুন, পরিবারের বাবা-মা বা অন্যদের চোখের নিচে কাল বা গর্ত থাকলে পরবর্তীতে আপনার চোখের নিচে কালো হতে পারে।
- পুষ্টির অভাব বিশেষ করে যে সকল ভিটামিন চোখের জন্য উপকারী যেমন ভিটামিন কে এবং ভিটামিন বি ১২ ইত্যাদির অভাবজনিত কারণে চোখে নিচে কালো ডার্ক সার্কেল হতে পারে।
- তাছাড়া অতিরিক্ত সময় ধরে সূর্যের আলোতে কাজ করলে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের মেলানিন এর উৎপাদনকে বাড়িয়ে দিতে পারে এর ফলশ্রুতিতে চোখের চারপাশ কালো দেখাতে পারে।
চোখের নিচে কালো দাগ কোন রোগের লক্ষণঃ
আমাদের চেহারার সৌন্দর্যের একটি অন্যতম অংশ হচ্ছে চোখ। আর যদি চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে তবে সেটা আমাদের মুখের সৌন্দর্য হানি করে। আর চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে বেশ কিছু রোগের লক্ষণ। প্রথমত চোখে নিচে যদি আপনার কালো দাগ দেখা যায় তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি অনেক মানসিক টেনশন এবং নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন।
এটা হতে পারে আপনার শরীরে পুষ্টিহীনতা বা ভিটামিন ডি এর অভাব বা অন্যান্য যেকোনো ভিটামিনের অভাবে। অতিরিক্ত চোখের এলার্জি থেকে চোখের নিচে কালো হতে পারে। যদি অ্যালার্জিজনিত কারণে আপনার চোখে নিচে কালো দাগ হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাছাড়া আপনার ওজন যদি হঠাৎ কমে যায় অথবা রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় তখন আপনার চোখের নিচে কালো দাগ আসতে পারে।
হঠাৎ চোখের নিচে কালো হলে খেয়াল রাখতে হবে যে রক্তস্বল্পতা হয়েছে কিনা। তাছাড়া প্রাথমিক পর্যায়ে চোখের নিচে কালো দাগ হলে গুরুত্ব না দিলে সেটি অনেক বড় বড় রোগেরও কারণ হতে পারে। তাই কোন ছোটখাটো রোগকে অবহেলা করা উচিত নয়। আমাদের শরীরের যেকোনো অবস্থাতেই আমাদের যত্নবান এবং সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়ঃ
আমরা অনেকেই জানতে চাই চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। আর্টিকেলের এই অংশে আমরা আলোচনা করব কিভাবে আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে পারি। নিচে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার বিভিন্ন ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
আলুর ব্যবহার
আলু আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে । এর পাশাপাশি আমাদের চোখে নিচে কালো দাগ দূর করতেও আলু বেশ কার্যকরী। এক্ষেত্রে আপনি আলুর রস অথবা বা আলু পাতলা করে কেটে চোখের উপর লাগিয়ে রাখতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি রাতে আলুর রস চোখের নিচে তুলোর সাহায্যে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলা যায়। এতে আলুর কার্যকারিতা খুব ভালো পাওয়া যায়।
টমেটো ও লেবুর রস
টমেটো এবং লেবুর রস আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি যেমন আমাদের ত্বককে কোমল করে তার সাথে সাথে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দূর করতেও সাহায্য করে। টমেটোর রস এবং লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে একটি নরম কাপড় বা তুলার সাহায্যে চোখের নিচে লাগিয়ে রাখুন কমপক্ষে ১৫ মিনিট। তারপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন এটি প্রতিদিন একবার করে করলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা সম্ভব।
ঠান্ডা টি ব্যাগ
ব্যবহৃত টি ব্যাগ আমরা অনেকেই ফেলে দিই। কিন্তু এই ব্যাগ ফেলে না দিয়ে রেফ্রিজারেটরে কিছুক্ষণের জন্য রেখে ঠান্ডা করে যদি চোখের উপর কয়েক মিনিট রাখা যায় তাহলে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল কমে যায়। কালো চা বা গ্রিন টি যেকোন টি ব্যাগ হলেই হবে।
শসার ব্যবহার
চোখের নিচে কালো দাগ কমাতে আপনি শসা পাতলা পাতলা করে গোলাকার আকৃতিতে কেটে চোখের উপর দিয়ে রাখুন কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এভাবে নিয়মিত কয়েকদিন করলে আপনার চোখে নিজের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। এটি যেমন চোখের নিচে কালো দাগ দূর করবে তেমনি চোখে প্রশান্তি এনে দেবে এবং ফোলা ভাব কমাতেও সাহায্য করে।
এলোভেরা জেলঃ
এলোভেরা জেল এ রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল কমাতে সাহায্য করে। আপনি যদি কয়েকদিন এলোভেরা জেল চোখের নিচের অংশে লাগিয়ে কয়েক মিনিট রেখে তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলেন তাহলে চোখের নিচে ড্রাগ সার্কেল কমে যাবে।
গোলাপজলঃ
চোখের নিচের কালি দূর করতে গোলাপজল বেশ উপকারী। দুইটি তুলোর প্যাডে গোলাপজল ভালোভাবে ভিজিয়ে নিয়ে তারপর দুই চোখের উপর রেখে দিন কমপক্ষে ১০ মিনিট। এরপর ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে চোখ পরিষ্কার করুন। কয়েকদিন নিয়মিত এই উপায়ে চোখের যত্ন নিলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা সম্ভব হয়।
ভিটামিন ই কাপ ও নারিকেল তেলঃ
ভিটামিন ই ক্যাপ আমাদের ত্বকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভিটামিন ই ক্যাপ এর সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে আমাদের চোখের নিচে অথবা আমাদের স্কিনে ব্যবহার করলে সকল প্রকার কালো দাগ দূর হয়ে যায়। এটি চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করতে বেশ কার্যকরী।
এ সকল ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম, পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া, মানসিক চিন্তা মুক্ত থাকা ইত্যাদি বেশ জরুরী। তাছাড়া ধূমপান থেকে বিরত থাকা এবং অতিরিক্ত সূর্যের আলোতে কাজ করার সময় সানস্ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
আশা করি, চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয়ঃ
আমাদের অনেকেরই ধারণা শুধু রাতে ঘুমের স্বল্পতা অথবা মানসিক চাপ ও ক্লান্তি থেকে চোখের নিচে কালো দাগ হয়। তাই আমরা চোখের নিচের কালো দাগ তোলার জন্য বিভিন্ন ধরনের রূপচর্চা করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা আমাদের শরীরে কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয়।
চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার জন্য চিকিৎসকরা ভিটামিন ডি এর অভাবকে কারণ হিসেবে মনে করেন। ভিটামিন ডি এর অভাবের প্রভাবে চোখের সমস্যা ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা, হতে পারে, যেমন- ঘুম কম হওয়া, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও অবসাদ, চুল পড়ে যাওয়া, মাংসপেশীতে ব্যথা ইত্যাদি।
আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণ করতে সপ্তাহে দুই এক দিন প্রাকৃতিক উপায়ে সূর্যের আলোতে ২০-৩০ মিনিট থাকা উচিত। তাছাড়া ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে শরীরের রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয় এবং চোখের নিচে কালচে দাগ এর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ইত্যাদি ভিটামিনের অভাবেও চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে থাকে।
আমাদের শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে খাদ্য তালিকায় সকল প্রকার ভিটামিন নিশ্চিত করা জরুরী। কেননা এক এক ভিটামিন আমাদের শরীরের এক এক ধরনের কাজ করে থাকে।
আশা করি, আর্টিকেলের এই অংশটুকু পড়ে আপনারা কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবার আসুন, চোখের নিচে কালো দাগ এবং গর্ত দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
চোখের নিচে কালো দাগ এবং গর্ত দূর করার উপায়ঃ
বর্তমানে আমাদের মধ্যে অনেকেই চোখের নিচে কালো দাগ এবং চোখ বসে যাওয়া গর্ত হয়ে যাওয়া সমস্যায় ভুগছি। এটা যেমন আমাদের চেহারার সৌন্দর্যহানি করে তেমনি শারীরিক অসুস্থতারও জানান দেয়। চোখের নিচে গর্ত বা কালো দাগ হওয়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে।
তার মধ্যে বিশেষ কারণ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা নিদ্রাহীনতা। তাছাড়া অতিরিক্ত শরীরের ঘাম থেকে ডিহাইড্রেশন বা পানি কম পান করা এর আরেকটি উন্নত কারণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এটি বংশগত বা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে।
আবার অনেক ক্ষেত্রে ধূমপান বা অ্যালকোহল দীর্ঘমেয়াদী সেবনের ফলে আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। বর্তমান সময়ে এই সমস্যাটি ব্যাপক আকার ধারণ করার পেছনে আরও একটি কারণ হলো মোবাইল ও কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকা।
আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় জেনে নিন।
তাছাড়া শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় এবং সেটা চোখের নিচে গর্ত বা কালো দাগের কারণ হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর অভাবেও চোখের নিচে কালো দাগ বা গর্ত হতে পারে বলে ধারণা করেন বিশেষজ্ঞরা।
তাছাড়া কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ তা আপনারা এই আর্টিকেলের উপরোক্ত অংশ পড়ে জানতে পেরেছেন। এখন আসুন, আমরা চোখের নিচে কালো দাগ এবং গর্ত দূর করার উপায় গুলো আলোচনা করি।
- বর্তমানে কর্মব্যস্ত জীবনে ঘুম খুব কমে এসেছে। দিনে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা একটানা ঘুম আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। তা না হলে চোখের নিচের কালো দাগ সহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান।
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত ফোন বা ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। মোবাইল ফোনের আলো আপনার চোখের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
- সারাদিনে কমপক্ষে ১০ গ্লাস পানি পান করুন। কেননা ডিহাইডেশন থেকে আপনার চোখে নিচু গর্ত এবং কালো দাগ হতে পারে।
- প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- শসা এবং আলু পাতলা-পাতলা গোলাকার করে কেটে নিয়মিত চোখের উপর দিয়ে রাখুন ৫-১০ মিনিট। এভাবে কয়েকদিন নিয়মিত করলে চোখের নিচে কালো দাগ চলে যায়।
- ছোট বরফের টুকরা ফ্রিজ থেকে নিয়ে সুতির মোটা কাপড় দিয়ে মুড়ে চোখের উপর ঠান্ডা সেক দিন। সহনীয় মাত্রায় যতক্ষণ আপনি এটা রাখতে পারবেন। এটা চোখের নিচে গর্ত তুলতে এবং কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- বাদাম তেল বা আমন্ড অয়েল চোখের নিচের গর্ত এবং কালো দাগ দূর করার আরেকটি উপায়। এই তেল আপনি চোখের নিচে ১০-১৫ মিনিট দিয়ে রাখুন অতঃপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
- খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন। বিশেষ করে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল সহ শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ।
- নারিকেল তেল আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী একটি জিনিস নারিকেল তেল আমাদের ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে। এমনকি চোখের নিচের কালো দাগ সার্কেল এবং বলিরেখা দূর করতে নারিকেল তেল ব্যবহার করুন।
- ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা দুধ এর মধ্যে নরম পাতলা কাপড় বা তুলো ভিজিয়ে চোখের নিচে দিয়ে রাখলে চোখে নিচে ড্রাগ সার্কেল রিমুভ হয়। এমনকি এক্ষেত্রে আপনি দুধের খর ব্যবহার করতে পারবেন। দুধের সর আপনার ত্বকের বলিরেখা এবং চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায়ঃ
টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করা যায় এই কথাটা অনেকে প্রথমবার শুনলেন তাই না? চোখের নিচে কালো দাগ এখন একটি কমন সমস্যা। কাজের চাপ, অতিরিক্ত মোবাইল স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা, রাতে ঘুম না হওয়া ইত্যাদির জন্য এখন এই সমস্যাটা অনেকের দেখা দিচ্ছে।
প্রথমে আপনার মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এবং শুক্তো করে মুছে নিন। এবার একটি সাধারণ টুথপেস্ট যা আমরা ব্যবহার করি সেখান থেকে এক চিমটি টুথপেস্ট নিয়ে তার সাথে হালকা একটু এলোভেরা জেল ও গোলাপ জল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে।
তারপর এই মিশ্রণটির চোখের নিচের কালো দাগের উপরে হালকা করে লাগাতে হবে খেয়াল রাখতে হবে যেন চোখের ভিতরে এটা ঢুকে না যায়। এভাবে পাঁচ মিনিট রেখে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে চোখ ধুয়ে নিতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করলে চোখে নিচের ড্রাক সার্কেল রিমুভ হয়।
অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ রইল। ছোট বাচ্চাদের এই মিশ্রণটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। আশা করি, টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এবার আমরা আলোচনা করব বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় সে সম্পর্কে।
বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয়ঃ
আমাদের শিশুদের মধ্যে অনেকেরই চোখের নিচে কালো দাগ বা চোখের নিচে বসে যাওয়া দেখতে পায়। বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় সেই সম্পর্কে আপনাদের অনেকেই মনে কৌতুহল রয়েছে। কেউ আবার মনে করেন এটি কোন বড় রোগের পূর্বাভাস নয় তো? এটি খুব সাধারণ ব্যাপার এবং বয়স্কদের তুলনায় বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ অস্থায়ী হয়।
শিশু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগের বিশেষ কিছু কারণ থাকতে পারে। তাদের মতে বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে প্রধানত জেনেটিক কারণে অর্থাৎ বাবা-মায়ের চোখের নিচে কালো দাগ বা চোখের নিচে গর্ত থাকলে বাচ্চাদের তা হতে পারে। তাছাড়া শিশু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে সকল বাচ্চাদের এলার্জিক সমস্যা রয়েছে এবং সর্দি, কাশি জনিত সমস্যা দীর্ঘদিন থাকে তাদের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় সর্দি কাশি বা ফ্লু এ আক্রান্ত হলে বাচ্চারা রাতে ঘুমাতে পারে না ঘুমের অভাব হলে অনেক সময় চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে। তাছাড়া যে সকল বাচ্চারা একটুতেই কান্নাকাটি করে এবং চোখ ঘষাঘষি করে তাদের চোখের নিচের নরম পাতলা চামড়াতে প্রভাব পড়ে এবং কালচে আকার ধারণ করতে পারে।
তাছাড়া বাচ্চারা অনেক সময় পানি পান করতে চায় না পানি স্বল্পতা থেকেও চোখে নিচে কালো দাগ হতে পারে এজন্য শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন। বাড়ন্ত বাচ্চাদের প্রচুর পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে সেক্ষেত্রে যদি সঠিক পরিমাণে পুষ্টি তার শরীরের না যায় তাহলে বাচ্চারা রক্তস্বল্পতা হয় এবং চোখে নিচে কালো দাগ দেখা দিতে পারে।
তবে ছোট বাচ্চাদের চোখে নিচে কালো হলেই যে বড় কোন সমস্যা বা রক্তস্বল্পতা তা ভেবে নেওয়া ঠিক না। এই সমস্যা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করি বাচ্চাদের চোখের নিচে কালো দাগ কেন হয় সে সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।
লেখক এর মন্তব্যঃ কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয়
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয় পুরো আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত। তাছাড়া আপনারা চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কেও অবগত হতে পেরেছেন। থাকতে পারে যা আমরা উপুক্ত আলোচনা করেছি।
এসব কারণ সম্পর্কে জেনে এবং প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে জানার পর আমাদের সকলেরই এই বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুত্বের সাথে শেয়ার করে তাদের ও পড়ার সুযোগ করে দিন। এরকম নতুন নতুন তথ্য পেতে সর্বদা আমাদের এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ।
আর আর ডাইরির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url